ডিম ও মুরগির বাজার মধ‍্যস্বত্বভোগীর হাতে জিম্মি বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে ডিম আমদানি করলে প্রতিটি ডিমের দাম হবে ২০ টাকা বলে জানিয়েছেন তারা।

মুরগি ও ডিমের বাজার এখন মধ‍্যস্বত্বভোগীরা নিয়ন্ত্রণ করছে। খামার থেকে ডিম ও মুরগি তিন-চার হাত ঘুরে ভোক্তার কাছে যাচ্ছে।

এই হাত ঘুরতেই বেড়ে যাচ্ছে দাম। সরকারকে এই মধ‍্যস্বত্বভোগীদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত ‘পোল্ট্রি শিল্পে সংকট : প্রান্তিক খামারিদের সুরক্ষা ও ডিম-মুরগির উৎপাদন খরচ হ্রাসে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনাসভায় এ খাতের করপোরেট প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সংগঠনের নেতারা এসব অভিযোগ তোলেন।

সম্প্রতি ডিম-মুরগির দাম বৃদ্ধিতে তাদের কোনো সিন্ডিকেট নেই উল্লেখ করে পোল্ট্রি খাতের করপোরেট প্রতিষ্ঠানের মালিকরা বলেন, মধ‍্যস্বত্বভোগীরাই দাম বাড়াচ্ছে।

সরকার কেন তাদের নিয়ন্ত্রণ করছে না? সেটি না করে সরকার ডিম আমদানির কথা বলছে। সরকার যদি ডিম আমদানির অনুমতি দেয় তাহলে দেশের পোল্ট্রি শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে। আর এ শিল্প ধ্বংস হলে দেশের মানুষকে ২০ টাকা পিসে ডিম খেতে হবে।অনুষ্ঠানে ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ বলেন, বর্তমানে দেশের ডিম মুরগির বাজারের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ প্রান্তিক খামারিদের অংশ।

আর ১৫ থেকে ২০ শতাংশ করপোরেট ব্যবসায়ীদের হাতে। এ অবস্থায় কিভাবে করপোরেট ব্যবসায়ীরা বাজার নিয়ন্ত্রণ করবেন?তিনি বলেন, আমদানিনির্ভর কাঁচামালের ফলে দেশে পোল্ট্রি খাদ্যের দাম বেড়েছে। তাই দাম বেড়েছে মুরগি আর ডিমের।

অ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, গত তিন বছরে পোল্ট্রি খাদ্যের দাম বেড়েছে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ। এই দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে মুরগির বাজারে।

তার পরও খামার পর্যায়ে এক কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম পড়ে ১৪৫ টাকা। কিন্তু ভোক্তাকে কেন ২০০ টাকায় খেতে হয়? এ জন্য দায়ী মধ্যস্বত্বাভোগীরা। তারাই এই অযৌক্তিক দাম বাড়াচ্ছে। মাঝখানে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কারা নিয়ে যাচ্ছে সেটি সরকারকে খুঁজে দেখতে হবে।অ্যানিমেল হেলথ কম্পানি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি সাইমুন হক বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ডলারের দাম বেড়েছে ৩০ শতাংশ। এ জন্য পোল্ট্রি খাদ্য ও ভ্যাকসিনের দাম বেড়ে গেছে। এর প্রভাবেও বাজারে দাম বেড়েছে।

ব্রিডার্স অ্যাসেশিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি কাজী মাহিন হাসান বলেন, কয়েকটি কারণে মুরগির দাম বাড়ে। যখন জোগানের চেয়ে চাহিদা বেড়ে যায় তখন বাজার দামে প্রভাব পড়ে। ডিমের উৎপাদন কমে গেছে। এ ছাড়া সাম্প্রতিক ডিমের যে দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে তা অতিরিক্ত গরমে। গরমের কারণে ডিমের উৎপাদন কমেছে। এর প্রভাবও পড়েছে বাজারে। কিন্তু বড় খামারিদের যে সিন্ডিকেটের অভিযোগ করা হয়, সেটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। মাঝখানে যে তিন-চার হাত বদল হয় তারাই দাম বাড়ায়।

ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনাসভা সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।

‘আমদানি করলে একটি ডিমের দাম হবে ২০ টাকা’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *