স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) মধ্যে বাংলাদেশের বাজেট বাস্তাবায়ন সর্বনিম্নে। এর মূল কারন রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব, দুর্নীতি ও সীমিত সম্পদ। এই তিন সমস্যার সামাধান করতে পারলে দেশে বাজেট বাস্তবায়ন বাড়ানো অনেকাংশেই বাড়ানো সম্ভব বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বুধবার ( ৩ মে) রাজধানীর ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে আয়োজিত ‘বাজেট রিপোটিং’ শীর্ষক এক কর্মশালায় এসব কথা বলেন। ইআরএফ, রিসার্চ এন্ড পলিসি ইনট্রিগ্রেশন ফর ডেভলাপম্যান্ট (র‌্যাপিড) এবং দ্যা এশিয়া ফাউন্ডেশন (টিএএফ) যৌথ ভাবে এই কর্মশালা আয়োজন করে।

ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম’র সঞ্চালনায় এতে মূল উপস্থাপনা করেন র‌্যাপিড’র চেয়্যারম্যান ড. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ছাড়া স্বল্পোন্নত অন্যদেশগুলো তাদের জিডিপির ২০-২৫ শতাংশ বাজেট বাস্তবায়ন করতে পারে। কিন্তু বাংলদেশ জিডিপির ১৪-১৫ শতাংশ বাজেট বাস্তাবায়ন লক্ষ্য নির্ধারণ করে। সেখান থেকে রিভাইস বাজেটে তা ১৩-১৪ শতাংশে নেমে আসে।

এজন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছার ঘাটতি বড় একটি কারন। যদি রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকে তবে বাজেট বাস্তবায়ন বাড়নো সম্ভব। এছাড়া দুর্নীতি ও রেভিনিউ কালেকশন সক্ষমতার ঘাটতিও অন্যতম কারন। যদি দুর্নীতি কমিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে রেভিনিউ কালেকশন বাড়ানো যায় তবে বাজেট বাস্তাবায়ন বর্তমানের তুলনায় অনেক বাড়ানো যাবে। এজন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডেকে (এনবিআর) কর নেট ও আহরণ আরো বাড়াতে হবে।

ইআরএফ সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েতুল্লাহ মৃধা’র সভাপতিত্বে কর্মশালয় উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন এশিয়া ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ। তিনি বলেন, আমাদের দেশে বাজেটের গোপনীয়তা কম কিন্তু তার পরও বাজেট বাস্তাবায়নের বিষয়ে জবাবদিহীতা খুব একটা নেই। তাই দুর্নীতিগুলো বেশি হয়। অথচ অনেক দেশে বাজেটের সিক্রেসির বিষয়গুলো কঠোর ভাবে মানা হয় কিন্তু তাদের জবাবদিহীতা বেশি, তাই তাদের দুর্নীতিও কম। বিভিন্ন সংবাদ পত্র, টেলিভিশন ও অনলাইন গণমাধমের সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে আয়োজিত কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দ্যা ফাইনান্সিয়াল এক্সেপ্রেস’র সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, র‌্যাপিডের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ড. আবু ইউসুফ প্রমুখ। এসময় বক্তারা গতানুগতিকতার বাইরে এসে নতুন ভাবে বাজেট রিপোর্ট উপস্থাপনের পরামর্শ দেন। তারা বলেন, বাজেটে আকার বা সংখ্যার চেয়ে বাজেটে অর্থনীতি ও সাধারণ মানুষের আয়ের উপর কি প্রভাব পড়বে সে বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। এছাড়া পূর্ববর্তী বাজেট কতটা বাস্তাবায়ন হয়েছে আর নতুন বাজেটে একই বিষয়ে কি রয়েছে সে বিষয়ে বিশ্লেষণ করে তা সাধারণ মানুষের জন্য সহজ বোধ্য করে উপস্থাপন করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *