আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে অগ্রগতি, সময় ও অর্থ বাঁচাতে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার ই-কেওয়াইসি চালু করেছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) বিএফআইইউ জারি করা নতুন নীতিমালায় ব্যাংক হিসাব, বিও হিসাব ও বিমা পলিসি খোলা আগের চেয়ে আরও সহজ হয়েছে। মাত্র পাঁচটি ধাপে পাঁচ মিনিটেই খোলা যাবে এসব হিসাব।
ফলে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে বাংলাদেশ আরও এগোবে। গ্রাহক হয়রানি ও ব্যয় কমবে। ই-কেওয়াইসির মাধ্যমে ব্যাংক বা আর্থিক সেবা গ্রহণে হিসাব খোলা বা পুজিবাজারের বিও হিসাব খোলা বা বিমা সংক্রান্ত পলিসি খোলার বিদ্যমান প্রক্রিয়া আরও দ্রুত ও সহজে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। জারি করা গাইডলাইনের নির্দেশনা অনুযায়ী ই-কেওয়াইসি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে জাতীয় পরিচয়পত্রধারী যেকোনো ব্যক্তি মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যে এখন ব্যাংক হিসাব বা বিও হিসাব বা বিমা পলিসি খুলতে পারবেন। এতে গ্রাহক প্রতি হিসাব খোলা ও কেওয়াইসি সংরক্ষণের খরচও প্রায় ৫০ হতে ৮০ শতাংশ কমে যাবে।
সরকারের ভিশন-২০২১ ও ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্য বাস্তবায়নে প্রতি ঘরে ঘরে স্বল্প খরচে আর্থিক সেবা দেওয়ার পথে সহায়ক হবে ই-কেওয়াইসি প্রক্রিয়া। এছাড়াও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সুশাসন নিশ্চিত, আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে প্রবৃদ্ধি অর্জন, আর্থিকখাতে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।
ই-কেওয়াইসি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে একজন গ্রাহক আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে অথবা আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বা এজেন্ট গ্রাহকের বাসায় উপস্থিত হয়ে অথবা একজন গ্রাহক ঘরে বসে নিজে নিজেই আর্থিক হিসাব খুলতে পারবেন। ফলে ই-কেওয়াইসি চালুর কারণে অতি সহজেই আর্থিক সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর প্রক্রিয়া আরও একধাপ এগোলো ।
সম্প্রতি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ‘মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ বিষয়ক জাতীয় কৌশলপত্র’ প্রকাশিত হয়েছে। আলোচ্য গাইডলাইনে আঙুলের ছাপ ও মুখচ্ছবির ম্যাচিংয়ের মতো দু’টি পদ্ধতি উল্লেখ রয়েছে। তবে ব্যাংক বা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান চাইলে আইরিশ ম্যাচিংয়ের মতো পদ্ধতিও গ্রহণ করতে পারবে। তবে এ পদ্ধাতিতে জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া হিসাব খোলা যাবে না। যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই তাদের বিদ্যমান পদ্ধতিতে হিসাব খুলতে হবে।
ই-কেওয়াসি চালুর আগে বিএফআইইউ ১৯টি ব্যাংক একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও একটি মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসদানকারী নিয়ে ৩৩টি জেলার ৫২টি স্থানে পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। ওই পাইলট প্রকল্পের অভিজ্ঞতার আলোকে এবং বিভিন্ন অংশীজনদের সুপরিশের ভিত্তিতে গাইডলাইনটি প্রণয়ন করা হয়েছে। পাইরটিংয়ের আগে সব অংশীজন যথা নির্বাচন কমিশন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আওতায় বাস্তবায়নাধীন এটুআই প্রজেক্টের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করে। পাইলটিংকালে বিশ্বব্যাংক কারিগরি সহায়তা প্রদান করেছে।